Saturday, May 18, 2024
Homeলাইফ স্টাইলমিষ্টি বেশি খেলে কী হয়?

মিষ্টি বেশি খেলে কী হয়?

বাঙালির জীবনে মিষ্টির অবদান অনস্বীকার্য। ঈদ, বিয়ে, জন্মদিন – যেকোনো শুভ অনুষ্ঠানেই মিষ্টির উপস্থিতি বাধ্যতামূলক। তবে, মিষ্টির প্রতি অতিরিক্ত আসক্তি আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে।

মিষ্টি বেশি খাওয়ার ফলে যেসব সমস্যা দেখা দিতে পারে

১. ডায়াবেটিস

মিষ্টিতে থাকে প্রচুর পরিমাণে চিনি, যা রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি করে। দীর্ঘদিন ধরে অতিরিক্ত মিষ্টি খাওয়ার ফলে ডায়াবেটিসের ঝুঁকি অনেকাংশে বেড়ে যায়।

২. স্থূলতা

মিষ্টিতে থাকে প্রচুর ক্যালোরি। নিয়মিত অতিরিক্ত মিষ্টি খাওয়ার ফলে শরীরে অতিরিক্ত চর্বি জমা হয়, যা স্থূলতার কারণ হতে পারে।

৩. হৃদরোগ

স্থূলতা এবং ডায়াবেটিস হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ায়। অতিরিক্ত মিষ্টি খাওয়ার ফলে এই দুটি রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়, যা হৃদরোগের ঝুঁকিও বৃদ্ধি করে।

৪. দাঁতের ক্ষয়

মিষ্টিতে থাকা চিনি মুখের ব্যাকটেরিয়াকে খাদ্য সরবরাহ করে। এই ব্যাকটেরিয়া দাঁতের প্লাক তৈরি করে, যা দাঁতের ক্ষয়ের কারণ হতে পারে।

৫. ত্বকের সমস্যা

অতিরিক্ত মিষ্টি খাওয়ার ফলে ত্বকে ব্রণ, বলিরেখা এবং ফুসকুড়ির মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।

৬. মেজাজের ওঠানামা

মিষ্টি খাওয়ার পর রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বৃদ্ধি পায়, এরপর দ্রুত হ্রাস পায়। এর ফলে মেজাজের ওঠানামা, ক্লান্তি, এবং বিরক্তিবোধ দেখা দিতে পারে।

৭. পুষ্টির ঘাটতি

মিষ্টিতে থাকে না তেমন কোনো পুষ্টি উপাদান। অতিরিক্ত মিষ্টি খাওয়ার ফলে পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার পরিমাণ কমে যায়, যার ফলে পুষ্টির ঘাটতি দেখা দিতে পারে।

কতটুকু মিষ্টি খাওয়া নিরাপদ?

  • বয়স
    • শিশু (২-৮ বছর):
      • 12 গ্রাম (3 চা চামচ)
    • কিশোর (৯-১৩ বছর)
      • 24 গ্রাম (6 চা চামচ)
    • বয়স্ক (১৪-৫০ বছর)
      • 30 গ্রাম (7.5 চা চামচ)
    • বয়স্ক (৫১+ বছর)
      • 25 গ্রাম (6.25 চা চামচ)
  • লিঙ্গ
    • পুরুষ
      • 38 গ্রাম (9.5 চা চামচ)
    • মহিলা
      • 25 গ্রাম (6.25 চা চামচ)
  • স্বাস্থ্যের অবস্থা
    • ডায়াবেটিস:
      • 5 গ্রাম (1.25 চা চামচ)
    • অন্যান্য:
      • ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী

মনে রাখবেন

  • এই পরিমাণগুলো সর্বোচ্চ সীমা।
  • ফল, দুগ্ধজাত দ্রব্য, এবং প্রক্রিয়াজাত খাবারে থাকা চিনিও এই পরিমাণের মধ্যে গণ্য।
  • মিষ্টির পরিবর্তে স্বাস্থ্যকর বিকল্প খান, যেমন ফল, বাদাম, বা দই।
  • নিয়মিত ব্যায়াম করুন।
  • আপনার যদি মিষ্টির প্রতি আসক্তি থাকে, তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

মিষ্টির প্রতি আসক্তি কমাতে কিছু টিপস

খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন

  • নিয়মিত খাবার খান
    • নিয়মিত খাবার খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা স্থিতিশীল থাকে এবং মিষ্টির প্রতি আসক্তি কম অনুভূত হয়।
  • প্রচুর ফল ও শাকসবজি খান
    • ফল ও শাকসবজিতে থাকে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার, যা দীর্ঘ সময়ের জন্য পেট ভরা রাখে এবং মিষ্টি খাওয়ার ইচ্ছা কমায়।
  • পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ খাবার খান
    • প্রোটিন, ফাইবার এবং স্বাস্থ্যকর চর্বি সমৃদ্ধ খাবার খেলে মিষ্টি খাওয়ার প্রয়োজনীয়তা কম অনুভূত হয়।
  • চিনিযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলুন
    • কোলা, সোডা, ফলের রস, এবং অন্যান্য চিনিযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলুন।
  • কৃত্রিম মিষ্টি ব্যবহার করুন
    • চিনির পরিবর্তে সুক্রালোজ, অ্যাসপার্টেম, বা স্টিভিয়ার মতো কৃত্রিম মিষ্টি ব্যবহার করতে পারেন।
  • পরিমিত পরিমাণে মিষ্টি খান
    • মিষ্টি সম্পূর্ণ বাদ না দিয়ে পরিমিত পরিমাণে খান।
RELATED ARTICLES

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

Most Popular

Recent Comments